ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ভারতের দখলে থাকা কোদালিয়া নদী -এর পাঁচ কিলোমিটার পুনরুদ্ধার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে এই নদীর বাংলাদেশের অংশ বিএসএফ কর্তৃক দখল করে রাখা হয়েছিল।
সোমবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৫৮ বিজিবির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোদালিয়া নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয় এবং মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় প্রায় ৪.৮ কোটি কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে। ১৯৬১ সালের বাংলাদেশ-ভারত (স্টিপ ম্যাপ সিট নম্বর-৫১) মানচিত্র অনুযায়ী, নদীর উল্লিখিত অংশ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার অন্তর্গত।
বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কোদালিয়া নদীর প্রকৃত মালিকানা নিয়ে ৫৮ বিজিবির নজরে আসে। এরপর বিভিন্ন নথিপত্র এবং মানচিত্র থেকে নদীর অবস্থান নিশ্চিত করে বিএসএফের অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। বিজিবির সদস্যরা সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কোদালিয়া নদী পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন। বর্তমানে বিজিবি সদস্যদের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি, যন্ত্রচালিত বোট এবং নদী পাড়ে দ্রুত টহল দেওয়ার জন্য অল-টেরেইন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করা হয়েছে।
মহেশপুরের যাদবপুর ইউনিয়নের মাটিলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন জানান, স্বাধীনতার পর কোদালিয়া নদী পাড়ের মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বসবাস শুরু করলে বিএসএফ নদীর ওই অংশ দখল করে নেয়, ফলে স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদ এবং নদীতে মাছ ধরতে পারছিলেন না। বিএসএফ সদস্যরা নদীর বাংলাদেশ অংশে গেলে বাধা প্রদান করতেন, যা এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে মারাত্মক বিরোধের জন্ম দিত।
নদী পুনরুদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. আজিজুস সহিদ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় স্থানীয়রা এ নদীতে নির্বিঘ্নে যেতে পারার কথা জানান।
বিজিবি কর্মকর্তারা নদী পুনরুদ্ধারে জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান এবং পরবর্তী প্রজন্মকে নদীর প্রকৃত অবস্থান ও মালিকানা সম্পর্কে অবগত রাখতে অনুরোধ জানান। গ্রামবাসীকে প্রয়োজনীয় সেচ ও চাষাবাদ চালু রাখার জন্যও অনুরোধ করা হয় এবং সেক্ষেত্রে কোনও বাধার সৃষ্টি হলে তা সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে অবহিত করতে বলা হয়। ভারতের দখলে থাকা ৫ কিলোমিটার কোদালিয়া নদী উদ্ধার করলো বিজিবি। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, এটি এতো বছর মীমাংসিত থাকলেও বিএসএফ এতো দিন ঝামেলা করেছে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই।