নিজস্ব প্রতিবেদক: কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক উন্নয়ন কাজ সমাপ্তির ৪ মাসের মাথায় ওই একই সড়কে আবারো নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হওয়ায়, জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে চার মাস আগে কেন এ সড়কের উন্নয়ন সমাপ্ত করা হলো? যেখানে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক খানাখন্দকে পরিপূর্ণ, সেখানে সুন্দর ও মজবুত ভাবে একটি সড়ক উন্নয়নের চার মাস যেতে না যেতেই কি কারণে এবং কাদের স্বার্থে খোড়াখুড়ির হিড়িক পড়েছে, তা নিয়ে চলছে কানাঘুষা।
রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর অধীন ৫০ নং ওয়ার্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশ, কাজলা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের টোলঘর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যে সড়কটি, সেটির উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হয়েছে গত ১ মার্চ। সড়ক উন্নয়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় বারো কোটি ঊনত্রিশ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত তারিখে কাজ সমাপ্ত করে সিটি কর্পোরেশনের কাছে সড়কটি বুঝিয়ে দেয় এবং যথারীতি এই উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সড়ক উদ্বোধন শেষে মেয়র তাপস বলেন, এই সড়ক যেভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে, আশা করা যায় আগামী ১০ বছর এ সড়কের উন্নয়নে আর হাত দিতে হবে না। কিন্তু মেয়রের সেই আশার বাণী চার মাস যেতে না যেতেই ভেস্তে দিল কিছু কর্মকর্তা। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে সুয়ারেজ লাইন নির্মাণের জন্য সড়ক কাটার অনুমতি নেয়। যদিও সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তাদের দাবি, তারা মহাসড়ক কাটার কোন অনুমতি ওয়াসাকে দেয়নি।
এ বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মোঃ বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এই বিষয়ে সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন, অঞ্চল ৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হারুনুর রশিদ। এ প্রতিবেদক নির্বাহী প্রকৌশলী হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন ওয়াসাকে মহাসড়ক কাটার কোন অনুমতি দেয় নাই। বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভিতরে যে সড়কগুলো আছে, কেবল সেগুলোর মধ্য দিয়ে ওয়াসার লাইন করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ওয়াসা অনুমোদনহীন ভাবে এই কাজ করেছে বলেও তিনি দাবি করেন। প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে ওয়াসার পিডির কাছে জবাব চাইলে তিনি নাকি ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি আরো জানান, কোনভাবেই এই মহাসড়কে খোঁড়াখুঁড়ি বা কাটার কোন অনুমতি অতীতেও সিটি কর্পোরেশন দেয়নি ভবিষ্যতেও দিবে না। প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার কথাও তিনি জানান।
বর্তমানে এ সড়কে ওয়াসা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ রাখলেও এলাকাবাসী মনে করছেন এটা সাময়িক। হয়তো মেয়রের বক্তব্য উপেক্ষা করে কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে আবারো সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি এবং কাটা শুরু হতে পারে। এতে সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকা বিনষ্ট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাকাবাসি উন্নয়ন সম্পন্ন সকল সড়ক বিশেষ তদারকিতে নেয়ার জন্য টাস্ক কোর্স গঠনেরও দাবি জানান। যেন যত্রতত্রভাবে সড়ক মহাসড়কের ক্ষতিসাধন এবং অর্থের অপচয় না হয়।