৩০ লাখ উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিস রোগী -কে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিস রোগী

নিউজ ডেস্ক : আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখ উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিস রোগী শনাক্ত করে তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বস্তরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা প্রোটোকলের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

আজ রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও প্যান প্যাসিফিক হোটেলে ‘‘বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসা কার্যক্রম সম্প্রসারণ’’ বিষয়ক এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে।

 

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশে মোট মৃত্যুর ৭০ ভাগই অসংক্রামক রোগের কারণে হয়ে থাকে, যার প্রায় অর্ধেকই অকাল মৃত্যু। অসংক্রামক রোগের মধ্যে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসজনিত ঝুঁকি সবচেয়ে বেশী বিধায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় এর চিকিৎসা কার্যক্রম জোরদার করা জরুরী।

 

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী)। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইদুর রহমান।

 

তারা আরো বলেন, গ্রামীন সরকারী প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি শহরের চিকিৎসা খাতে এবং বেসরকারী সেবার ক্ষেত্রেও উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে জাতীয় প্রোটোকলের ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এসকল সমন্বিত উদ্যোগ অসংক্রামক রোগজনিত অকালমৃত্যুর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারবে বলেও বিশেষজ্ঞরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

উল্লেখ্য, বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশের ১৮২টি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে।

 

সভায় উপস্থিত সংশ্লিষ্ট সরকারী-বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শকে গুরুত্বসহ বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখ উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিস রোগী -কে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় আনার লক্ষ্য পূরণে সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন।

 

উচ্চ রক্তচাপ-ডায়াবেটিস কি ?

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস দুটি ভিন্ন স্বাস্থ্য অস্তিত্বের সমস্যা, তবে এই দুটি অস্তিত্বের সমস্যা সাধারণত হয় এবং একটি অস্তিত্বের অসুবিধা অন্যটির উত্থানের ঝোঁক বাড়ায়।

উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension): এটি হলো রক্তের চাপের একটি অবস্থা, যেখানে রক্তের চাপ সাধারনের চেয়ে বেশি থাকে। রক্তের চাপ বাড়তে পারে কারণ প্রধানভাবে কয়েকটি কারণের জন্য, যেমন ওজনের বাড়তি, শারীরিক ক্রিয়ার অভাব, খাদ্যের মধ্যে বাড়ানো লবণ, উম্মুক্ত কাজ, অত্যন্ত চিন্তা এবং আবস্থানুমান উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে।

 

ডায়াবেটিস (Diabetes): এটি একটি মেটাবলিক রোগ, যেখানে শরীরে ইনসুলিন নির্মাণ বা ব্যবহার করা হয় না বা সঠিকভাবে কাজ করে না। এটি দুই ধরণের হয়: টাইপ 1 ডায়াবেটিস এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস একটি গভীরভাবে প্রভাবিত সমস্যা, কারণ এটি রক্ত শর্করা স্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে অক্ষম হতে পারে এবং এটি কয়েকটি জীবন প্রদান সমস্যা তৈরি করতে পারে, যেমন হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, লিভার সমস্যা।

 

উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস একে অপরের জন্য ঝোঁক বৃদ্ধি করতে পারে, এবং একটি ব্যক্তি যদি এই দু’টি সমস্যার সাথে সম্পর্কিত থাকে, তাদের পূর্বরূপ সহায়ক হতে পারে। ধরে নেওয়া হয়েছে যে এই সমস্যাগুলি সম্পর্কিত পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রণালী ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে, এবং ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

আরো পড়ুন: সাইকেল চালানোর উপকারিতা ও অপকারিতা